বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বেল্লাল হাওলাদার। চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার এই যুবকের। নিত্যদিনের অভাব-অনটনের সঙ্গে এবার ছেড়ে চলে গেছে শিশুসহ স্ত্রীও।
ভুক্তভোগী বেল্লাল হাওলাদার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া এলাকার মৃত তৈয়ব আলী হাওলাদারের ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পরে তিনি অটো চালিয়ে সংসার চালাতেন। তার একটি ১০ মাস বয়সী সন্তানও রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বরিশাল থেকে অটো নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন বেল্লাল হাওলাদার। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এলে ছাত্রদের ডাকে তিনিও আন্দোলনে যোগ দেন। এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলি এসে লাগে তার মাথা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তার চিকিৎসা শুরু হয়।
আহত বেল্লালের প্রতিবেশীরা জানান, তার আয়ে সংসার চলত। এখন তার চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে কিছুই করতে পারছেন না। এ কারণে তার স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এ ছাড়া তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
ভুক্তভোগী বেল্লাল হোসেন বলেন, ছাত্রদের জন্য মায়া লাগছিল। এ কারণে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিই। আমার শরীরে এখনো অনেক গুলি রয়েছে। আমার একটি চোখ হারিয়ে ফেলছি, অন্যটির অবস্থাও খারাপ। চোখই যদি না থাকে তাহলে পৃথিবীতে বেঁচে লাভ কী।
তিনি বলেন, সরকারের কাছে একটাই দাবি, আমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার। তাহলে যদি পৃথিবীর আলো একটু দেখতে পারি। আমি টাকা-পয়সা কিছুই চাই না আমার প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান জানান, সব আহত ও নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সবসময় তাদের পাশে থাকব।