রংপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও গঙ্গাচড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-১ আসন। স্বাধীনতার পর এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী একবার করে জয়লাভ করেন। পরে জাতীয় পার্টির দখলে চলে যায় আসনটি। ১৯৮৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একক আধিপত্য ধরে রাখে জাতীয় পার্টি।
তবে বিগত সময়ের বিতর্কিত দুটি নির্বাচনে (২০১৪ ও ২০১৮) জাতীয় পার্টি জয় পেলেও দলটির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। যার প্রমাণ মেলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফের শোচনীয় পরাজয় জানিয়ে দেয় সেই নড়বড়ে অবস্থান।
স্থানীয় ও বহিরাগত প্রার্থীর ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার এই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই আসনে এমপি ছিলেন বহিরাগত প্রার্থীরাই।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্থানীয় ও বহিরাগত ইস্যু সোচ্চার হতে পারে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কোণঠাসা আওয়ামী লীগ, আর নড়বড়ে জাতীয় পার্টির মাঝে এবার সুযোগের অপেক্ষায় জামায়াত-বিএনপি। এই দুই দল ছাড়া অন্য কারও সুযোগ নেই-এমনটাও মনে করেন কেউ কেউ।
বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রার্থী থাকলেও জামায়াতের একক প্রার্থী রয়েছে এই আসনে। তবে কোণঠাসা জাতীয় পার্টি থেকে কোনো প্রার্থী এখন পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রকাশ্যে আসেননি।
এদিকে এই আসনে তরুণদের অগ্রাধিকার দিয়ে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরীফ নেওয়াজ জোহাকে অনেকেই এগিয়ে রাখছেন।
বেতগাড়ি ইউনিয়নে তপন কুমার বলেন, এবার নির্বাচনে আর কোনো বহিরাগত প্রার্থীকে চাইনা। স্থানীয় ছেলে হিসেবে জোহার উপর ভরসা রাখতে চাই আমরা।
গজঘণ্টা ইউনিয়নের মোরসালিন মিয়া নিউজ সারাক্ষণকে বলেন, জোহা নির্যাতিত নেতা এবং বিএনপি পরিবারের সন্তান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। তাঁর যথাযথ মূল্যায়ন হিসেবে আমরা তাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই।
নোহালী ইউনিয়নের রাশিব মিয়া নিউজ সারাক্ষণকে বলেন,৫০ বছর ধরে এ এলাকায় যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা সবাই বাইরে থেকে এসেছেন।আমরা এবার আমাদের সন্তান জেহার পক্ষে মাঠে নামবো। দল তাকে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে তিনি এমপি হবেন।
বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসান বলেন, আমরা এবার তরুণদের অগ্রাধিকার দিতে চাই। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় জোহার ভালো পরিচিতি আছে। মানুষের বিপদে আপদে সে সব পাশে দাঁড়ায়।
রংপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরীফ নেওয়াজ জোহা নিউজ সারাক্ষণকে বলেন, তরুণদের অগ্রাধিকার দিয়ে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আমি এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এছাড়া এই আসনের তরুণ সমাজ আমার মনোনয়নের জন্য বেশি প্রত্যাশী। এরপরও দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবো।
তথ্য অনুযায়ী, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৬। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৪৮ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৬। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ছিলেন দুজন।